পদ্মজা খাপে ছুরি রেখে বললো,' নুহাশ আর আলিয়াও এসেছে?'
হেমলতার কথায় পদ্মজার ভাবনার সুতো ছিড়ল। দ্রুত খেয়ে উঠে। আজ আমের আচার বানানোর কথা ছিল।
মুখ ধুতে গিয়ে চুল ভিজিয়ে এসেছিস।খেয়ে রোদে বসে চুলটা শুকিয়ে নিবি ।’
টিন দেয়ালের কাঠের ঘড়ির কাঁটায় সকাল দশটা বাজল মাত্র। এখনো পদ্মজা উঠল না। হেমলতা মেয়েদের রুমে ঢুকেন। পদ্মজা দু’হাত ভাঁজ করে ঘুমাচ্ছে। জানালার পর্দা ভেদ করে আসা আলতো পেলব রোদ্দুরের স্পর্শে পদ্মজার মসৃণ, পাতলা ঠোঁট, ফর্সা ত্বক চিকচিক করছে। হেমলতা বিসমিল্লাহ বলে,তিনবার ফুঁ দেন মেয়ের শরীরে। গুরুজনরা বলেন, মায়ের নজর লাগে বেশি। নজর কাটাতে বিসমিল্লাহ বলে ফুঁ দিতে হয়। হেমলতার মায়া লাগছে পদ্মজার ঘুম ভাঙ্গাতে। তবুও আদুরে গলায় ডাকলেন, ‘পদ্ম। এই পদ্ম…’
নুড়ির হাসি মিলিয়ে গেল। আলিয়া বললো,'পেয়েছি,আমরা সব বই পড়ে শেষ করে ফেলবো। মা খুশি হবে।'
তুষারের বুক ফুঁড়ে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। কঠিন মনের তুষার ভেঙে পড়েছে! ভালোবাসার অনেক ব্যাখা সে শুনেছে। কিন্তু ভালোবাসা এমনও হতে পারে সে ভাবেনি। তুষার বললো,’তিনি অবশ্যই চেষ্টা করেছিলেন এই জগত থেকে বের হতে!
পদ্মজার কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। মজনু তার স্কুলেরই একজন শিক্ষক। নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্রীদের বাংলা পড়ায়। তার নামে অনেক অভিযোগ আছে। ছাত্রীদের হ্যারাস করে। শরীরে বিভিন্ন অজুহাতে হাত দেয়। বিয়ে করেছে দুটি। অনেক মেয়ে মজনুর জন্য স্কুলে আসা ছেড়ে দিয়েছে। তারা কিছু বলতেও পারে না,সইতেও পারে না। মাস ছয়েক আগে স্কুলের এক মেয়ে দাবি করেছে,সে গর্ভবতী। মজনু তাকে ভয় দেখিয়ে অনেকবার শারিরীক সম্পর্ক করেছে। মজনু অস্বীকার করে। উল্টো সমাজে মেয়েটির বদনাম হয়। তাকে আর স্কুলে দেখা যায়নি। পদ্মজা সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য মেয়েটিকে খুঁজেছে। কিন্তু পেল না। তার পরিবারকেও পেল না। মজনু পদ্মজার সাথে ঘেঁষার চেষ্টাও করেছে অনেকবার। চরিত্রহীন,লম্পট পুরুষ সে। পদ্মজা কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ পাঠিয়েছিল,লাভ হয়নি। মজনু সিলেটের এমপি সুহিন আলমের শালা। এজন্যই পদ্মজার অভিযোগ গ্রহণযোগ্য হয়নি। এমনকি সেই মেয়েটির পরিবার নাকি মামলা করেছিল,সেই মামলাও ধামাচাপা পড়ে যায় সুহিন আলমের ক্ষমতার কাছে। তাই মজনুর নাম উঠতেই পদ্মজা বিচলিত হয়ে উঠে। বললো,'কেন এমন মনে হলো?'
‘ঘুম থাইকা উইঠা তো দেহি নাই।’ ফরিনা থামলেন। তারপর বললেন,’এহন কই?’
একটা ছেড়িরেই ক্যান সবার চোক্ষে পড়তে হইব? চাইলেই কি সব পাওন যায়?’
ঈশ্বরের অন্তিম শ্বাস দেবারতি মুখোপাধ্যায়
আলোছাঁয়ার ঘোলাটে জাহানে বসবাস করা কৃষ্ণবর্ণের ঐন্দ্রজালিক চন্দ্রের জীবনে নির্মল,সুরূপা পদ্মর আকষ্মিক পদার্পণ কী পারবে অমানিশার সাথে সাথে চন্দ্রের অবশিষ্ট কলঙ্কও মুছে দিতে? নাকি সে অনুরাগের বাঁধনে শুকতারা হয়ে কলঙ্কিত চন্দ্রের কাছাকাছি থেকে যাবে আজন্ম! ~কুহু চৌধুরী
একজন মাসিহ, ত্রাণকর্তা বা নেতাকে স্বাগত ... অর্ডার করুন
পাতালপুরী নিস্তব্ধতায় ছেয়ে গেছে। কোনো সাড়াশব্দ নেই। বিথ্রিতে মেয়েগুলো বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছে। পদ্মজা এওয়ানের পালঙ্কে শুয়ে আছে। তার শরীরে বিন্দুমাত্র শক্তি নেই। ঘরের ছাদে অপলক চোখে তাকিয়ে আছে। চোখ দুটি শুষ্ক। এক ফোঁটাও পানি নেই। নিষ্প্রাণ হয়ে গেছে সে। বিটুর দরজার পাশে দেয়াল ঘেঁষে বসে আছে আমির। তার চাহনি এলোমেলো। মস্তিষ্ক অন্যমনস্ক। এক টুকরো ছোট পাথর কামড়াচ্ছে। পাথরটা দিয়ে নিজের দাঁতে আঘাত করছে। মজিদ তীক্ষ্ণ চোখে অনেকক্ষণ যাবৎ আমিরকে পরখ করছেন। তিনি আমিরের হাব-ভাব বুঝার চেষ্টা করছেন। আমিরের দুই হাত অনেকক্ষণ ধরে কাঁপছে। এমনকি তার শরীরও কাঁপছে। মজিদ বিস্মিত!
ফরিনা সেদিন আবেগে আপ্লুত হয়ে ছেলেকে বকেছেন,উচ্চস্বরে হেসেছেন। জীবনে স্বর্গীয় সুখ নিয়ে এসেছিল আমির। পিছনের কথা ভেবে, ফরিনার ঠোঁট দুটি থরথর করে কেঁপে উঠলো। চোখ দুটি ভিজে উঠে জলে। এই বয়সে এসে স্মৃতির নরকীয় যন্ত্রণা হজম করা খুব কষ্টের। কম তো বয়স হলো না। পঞ্চাশের ঘরে পড়েছেন। ফরিনার চোখের দেয়াল টপকে উপচে পড়ছে নোনা জল। সেই read more জল দেখে লতিফা বিচলিত হয়ে উঠলো,’খালাম্মা,ও খালাম্মা। কান্দেন কেন?’